,

চুয়াডাঙ্গায় ছাত্রলীগ ও কৃষক লীগ নেতাকে কুপিয়ে জখম

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি : চুয়াডাঙ্গা জেলা ছাত্রলীগ নেতা সোয়েব রিগান ও তার মামা কৃষক লীগ নেতা মহাসিন রেজাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করা হয়েছে।

রোববার রাত ১১টার দিকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল প্রাঙ্গণের গোলচত্বরের কাছে এ ঘটনা ঘটে।

ছাত্রলীগ নেতা সোয়েব রিগান (২৫) চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের মাঝেরপাড়ার আজম আলীর ছেলে।  রিগান চুয়াডাঙ্গা জেলা ছাত্রলীগের প্রস্তাবিত কমিটির সহসভাপতি বলে জানান সংশ্লিষ্টরা

জানা যায়, ১০-১২ জনের একদল যুবক ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে দুজনকে রক্তাক্ত জখম করে। দুজনকেই হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় রাতেই তাদের ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে স্থানান্তর করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক।

সোয়েব রিগানকে গত বছরের ১৯ জুলাই রাতে চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের রাহেলা খাতুন গার্লস একাডেমির সামনের রাস্তায় কুপিয়ে জখম করা হয়। দীর্ঘদিন ঢাকায় চিকিৎসা নিয়ে সম্প্রতি বাড়ি ফেরেন তিনি।

মহাসিন রেজা (৫০) চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের মাঝেরপাড়ার মৃত মুক্তার হোসেনের ছেলে। মহাসিন রেজা ও সোয়েব রিগান সম্পর্কে মামা ভাগ্নে। মহাসিন বাংলাদেশ কৃষক লীগ চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক।

আহত রিগানের স্বজনরা বলেন, রিগানের বাবা আজম আলী রোববার সন্ধ্যায় হৃদরোগে আক্রান্ত হন। তাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। রিগান তার বাবার পাশেই ছিলেন।

খবর পেয়ে মহাসিন রেজা রাতে তার ভগ্নিপতি আজম আলীকে দেখতে হাসপাতালে যান। রাত ১১টার দিকে মামা-ভাগ্নে দুজন হাসপাতালের পুরাতন ভবনের সামনের গোলচত্বরের নিকটস্থ ছাদের নিচে দাঁড়িয়ে কথা বলছিলেন। এসময় ১০-১২ জনের একদল যুবক ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, প্রথমে রিগানের ওপরই হামলা চালানো হয়। তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপানো শুরু হলে পাশে থাকা মামা মহাসিন রেজা ঠেকাতে গেলে তাকেও কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করা হয়।

মহাসিনের দু’হাতে ও পিঠে ছয়টি কোপ লেগেছে। হাতের শিরা কেটে গেছে।  রিগানের শরীরে অন্তত ১৫টি স্থানে কোপ লেগেছে।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের সার্জারি কনসালটেন্ট ডা. ওয়ালিউর রহমান নয়ন বলেন, মহাসিন ও রিগানের শরীরে ধারালো অস্ত্রের কোপে গভীর ক্ষত হয়েছে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণও হয়েছে। রিগানকে তাৎক্ষণিকভাবে রক্ত দিতে হয়।

অবস্থা গুরুতর হওয়ায় দুজনকেই ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে নেয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসক। রাত ১২টার দিকে রিগানকে অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকার উদ্দেশে নেয়া হয়। রাত পৌনে ১টার দিকে ঢাকার উদ্দেশে অ্যাম্বুলেন্সে তোলা হয় মহাসিন রেজাকে।

হামলার শিকার রিগান কথা বলতে পারেনি। রক্তক্ষরণের কারণে তার শ্বাস নিতে সমস্যা দেখা দেয়।

তবে আহত মহাসিন রেজা তাৎক্ষণিকভাবে অভিযোগ তুলে বলেছেন, ‘জিম, কালাম, রাব্বি, বাদশাসহ তাদের লোকজন পরিকল্পিতভাবে এ হামলা চালিয়েছে।’

জেলা যুবলীগের যুগ্মআহ্বায়ক চিৎলা ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমান জিল্লু বলেন, হামলার শিকার হয়েছেন যেই দুজন তারাও যেমন আওয়ামী লীগের যারা হামলা চালিয়েছে তারাও একই আদর্শের দাবিদার। অপরাজনীতির কুফল হিসেবে চুয়াডাঙ্গায় একের পর এক ঘটনা ঘটছে।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং ঘটনার বর্ণনা শোনেন চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) কনক কুমার দাস। তিনি বলেন, ঘটনার মূলকারণ জানা না গেলেও সদর থানার টহল পুলিশ দল আহত দুজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়।

হামলাকারীদের শনাক্ত করে গ্রেফতারের লক্ষ্যে ইতোমধ্যেই অভিযান শুরু হয়েছে। পুলিশের ৩টি দল অভিযান চালাচ্ছে।’

চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ওসি আবু জিহাদ খান জানান, অন্যতম অভিযুক্ত হামলাকারী কালামের অবস্থান জানার জন্য তার মাকে থানায় নেয়া হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর